ডিসিসিআইয়ের সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ডিসিসিআই গুলশান সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠককালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জাপানের সহযোগিতা অনস্বীকার্য, সেই সাথে জাপানের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিনের। তিনি জানান, ইপিবির তথ্য মতে, ২০২৪ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল তিন দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে এক দশমিক ৮১ বিলিয়ন ও এক দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশের রপ্তানির পণ্যের জন্য জাপান ১২তম বৃহত্তম বাজার।
তাসকীন আহমেদ বলেন, জাপানের উদ্যোক্তারা সার, নির্মাণ, টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও প্রোটেলিয়াম প্রভৃতি খাতে ইতোমধ্যে ৫০৭ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছে, যদিও জাপানের মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ হলো ১৮৪ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ প্রদত্ত নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে বিনিয়োগের আসার আহ্বান জানান। এছাড়া বাংলাদেশের অটোমোবাইল, মেশিনারি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি লজিস্টিক, পাট ও পাদুকা, তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে জাপানের কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তার উপর জোরারোপ করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের এসএমই খাতের সক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে জাপানের সহযোগিতার আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এটাকে কাজে লাগাতে সামগ্রিক শিল্পকাঠামোর বহুমুখীকরণের পাশাপাশি সরকারি সেবা প্রদানে দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি, যা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অন্যতম অনুষঙ্গ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং বিনিয়েগের বিদ্যমান সুবিধাসমূহ বিবেচনায় নিয়ে জাপানের উদ্যোক্তারা এদেশের বিনিয়োগ এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের দক্ষ মানবসম্পদের তার দেশে কর্মসংস্থানের ভালো সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত জানান, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অধিকতর সম্প্রসারণের দুদেশের মধ্যকার ইকোনোমিক পার্টারনশীপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ৭ম সভা সম্প্রতি টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রয়োজনীয় সংলাপের মাধ্যমে অতিদ্রুত এটি স্বাক্ষরিত হবে, যা দুদেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মানসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।