শি–পুতিন বৈঠক
চীনের সঙ্গে ‘অভূতপূর্ব’ সম্পর্কের প্রশংসা রুশ প্রেসিডেন্টের

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেইজিংয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরে চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দুই নেতার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানী বেইজিংয়ে আয়োজিত হতে যাচ্ছে চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজ, যার আগেই এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হলো।
বৈঠকে পুতিন দুই দেশের সম্পর্ক ‘অভূতপূর্ব উচ্চতায়’ পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “প্রিয় বন্ধু, আমি এবং রুশ প্রতিনিধি দল আবারও আমাদের চীনা বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে আনন্দিত। আমাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাশিয়া–চীন সম্পর্কের কৌশলগত স্বরূপকে প্রতিফলিত করছে, যা এখন অভূতপূর্ব উচ্চতায় রয়েছে।”
অন্যদিকে শি জিনপিং বলেন, “চীন–রাশিয়ার সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। মস্কোর সঙ্গে আমরা এমন এক বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করব, যা আরও ন্যায়সংগত ও যৌক্তিক।”
আগামীকাল বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) চীন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করবে। এটি হবে চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক প্রদর্শনী।
এ কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও অংশ নেবেন। ১৯৫৯ সালের পর এটাই প্রথমবার, যখন কোনো উত্তর কোরীয় নেতা চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিচ্ছেন।
বৈঠকে শি পশ্চিমা দেশগুলোর ‘বুলিং আচরণ’ ও ‘শীতল যুদ্ধ মানসিকতা’র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকেই দায়ী করেন এবং রাশিয়ার সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
এর আগে রোববার ও সোমবার তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে শি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে “গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব ও আধিপত্যবাদী নীতি”র বিরোধিতা করার আহ্বান জানান।

পুতিনও বলেন, এই সম্মেলন একটি নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করেছে, যা পুরনো ইউরোপকেন্দ্রিক মডেলকে প্রতিস্থাপন করবে।
যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে অস্থির করে তুলেছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সমাধান অধরাই রয়ে গেছে, তখন শি–পুতিনের ঘনিষ্ঠতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন বার্তা দিচ্ছে। দুই নেতা আগেও নিজেদের সম্পর্ককে “সীমাহীন বন্ধুত্ব” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

যেখানে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছেন, সেখানে বেইজিং প্রকাশ্যে পুতিনের সমালোচনা থেকে বিরত থেকে মস্কোর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।